ধর্ম এবং আধ্যাত্মিকতা অনেক মানুষের জীবনে গভীর প্রভাব রাখে, যা তাদের বিশ্বাস, আচার-অনুষ্ঠান, এবং জীবনযাপনের পথনির্দেশ দেয়। যাইহোক, ইতিহাস জুড়ে, কিছু ক্ষেত্রে ধর্মকে সংঘাত, যুদ্ধ, এবং সহিংসতার প্ররোচনা হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে, যার ফলে অনেক অসহায় মানুষ হিংসার শিকার হয়েছে। ধর্মবিশ্বাসের নামে অনেকে ভুল পথে পরিচালিত হয়ে সহিংস কর্মকান্ড বা জঙ্গিবাদে জড়িত হতে প্ররোচিত হচ্ছে, যা সমাজের জন্য চরমরূপে ক্ষতিকর।
ধর্মীয় ব্যবসা, বিশেষকরে “পীরত্ব” এমন এক ধারণা, যা বিনা পুঁজিতে লাভজনক হতে পারে এবং এটি কিছু অসাধু লোকের পক্ষে সহজ আয়ের এক পাথেয় হয়ে উঠেছে। এরা সাধারণত লোক ঠকানোর জন্য ধর্ম ও আধ্যাত্মিকতার মোড়কে নানান রকম ভাওতাবাজি ও প্রতারণা চালায়।
এই ধরনের প্রতারণা থেকে সাধারণ মানুষকে সচেতন এবং নিরাপদ রাখার জন্য এবং ভন্ডপীরদের দৌরাত্ম্য রোধ করার জন্য, শিক্ষা ও সচেতনতা বৃদ্ধি জরুরি। মানুষের মধ্যে বাস্তব ধর্মীয় শিক্ষা ও আধ্যাত্মিক জ্ঞানের প্রচার নিশ্চিত করা, ভন্ড গুরুদের প্রতারণা থেকে অসহায় ও নিরীহ মানুষের রক্ষা করতে পারে। এছাড়া, আইনের প্রয়োগ এবং উপযুক্ত নিয়মনীতির মাধ্যমে এধরনের প্রতারণা ও ভন্ডামি রোধ করা জরুরি।
এই ধরণের ভন্ড পীরদের কার্যকলাপ সমাজের জন্য একটি গভীর ও গণতান্ত্রিক মাত্রা বিপর্যয়। আধ্যাত্মিকতা বা ধর্মের নামে যে কোনো রকমের অসাধু আচরণ বা প্রতারণা, বিশেষ করে যৌন হয়রানি ও ধর্ষণ, অত্যন্ত গুরুতর অপরাধ যা অবিলম্বে শনাক্ত এবং শাস্তির আওতায় আনা প্রয়োজন। সাধারণ মানুষের একটি বৃহত্তর সচেতনতা এবং সরকারি তত্পারতা এসব প্রতিকুল কার্যকলাপ বন্ধে অপরিহার্য।
এই সমস্যাকে মোকাবেলা করতে গেলে শিক্ষার সাথে সাথে আইনী ব্যবস্থা এবং সামাজিক সচেতনতা অপরিহার্য। শিক্ষার মাধ্যমে মানুষের সূক্ষ্মবোধ এবং বিচারবিবেচনার ক্ষমতা উন্নত হবে, যা তাদের এই ধরণের প্রতারণা বুঝতে এবং এড়িয়ে চলতে সহায়তা করবে। আইনী ব্যবস্থা মানে এ ধরণের অপকর্মে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা এবং তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া। সামাজিক সচেতনতা অর্থ মানুষের এই সমস্যা সম্পর্কে জানাশোনা বৃদ্ধি করা এবং তাদের এ ধরণের কুকর্মের প্রতি সজাগ করা, যাতে তারা নিজেদের এবং আশপাশের মানুষকে সুরক্ষিত রাখতে পারে।
এ ধরণের অপরাধ কেবল নারীদের জন্য নয়, পুরো সমাজের জন্য একটি হুমকি এবং এটি বন্ধের জন্য সকলের সম্মিলিত প্রত্যয় ও কর্মশীলতা প্রয়োজন।