সময়টা হয়তোবা পেরিয়ে যাচ্ছে
কবে জানি মারা গেলো জুলহাজ-তনয়?
মনে নেই! মনে রেখে কি লাভ?
খাচ্ছি ঘুরছি  বেশ অাছি!
কথাগুলো বলতে গিয়ে যেন অবচেতন মন থেকেই কে যেন কলার চেপে ধরলো
“এত তাড়াতাড়ি ভুলে গেলি তুই?”
“ফিরে গেলাম প্রথম সময়গুলোতে
যখন অামি ভাবতাম নিজেকে নরকের কীট
শুধু অামিই এমন,বা অামি এমন কেন?
বন্ধুদের মত অামার মেয়েদের প্রতি কোন অার্কষণ নেই কেন?
এত কেন কেন এর উত্তর খুঁজতে খুঁজতে অামি হয়তো সময়ের অতলে চিৎকার করছিলাম বাঁচার তাগিদে।
সব কথার ভিতরে, সমাজের ভিতরে ধামাচাপা দেয়া সত্যটা কেউ যেন বলতে চেয়ে বলে না, পাপ হবে বৈকি!
চিন্তা, ডিপ্রেশনে অাস্তে অাস্তে নিজেকে শেষ করে দিচ্ছিলাম
নিজের পুরুষালী শরীরে কোমল।
হৃদয় যেন সমাজ থেকেই থাকা মানা।
দয়া মায়া ভালোবাসা সেখানে বহুদূর,
পুরো শহরজুড়ে অামি একা বড় একা।
অন্ধকারকে অাজকাল অনেক ভালো লাগার কারণ
পুরো অন্ধকারের মাঝে নিজেকে মিশিয়ে দেয়া যায়।
অন্তত অন্ধকার জানে সমানাধিকার।
দেখতে দেখতে বড় হলাম।
তারপর জানলাম শুধু অামি নই
আমার মত অনেকেই অাছে।
কিন্তু সব সত্য বাহিরে অানতে নেই।
ঠিক সে সময়ই জুলহাজ ভাইয়ের সাথে দেখা
অনন্ত কিভাবে বাচঁতে হয়, নিজের অামিকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর কাছেই শিখেছি, মানুষটা অদ্ভুত রকম ভালো ছিলেন!
সব সময়ই ভালো থাকার চেষ্টা করতেন অার সবাইকে ভালো রাখতেন! করল্লা  ভাজি নাকি তার সবচেয়ে প্রিয়! অথচ অামি করল্লার ধারে কাছেও যেতাম না কখনো! পরিচয়টা অবশ্য লেখালেখি নিয়েই তবে পরের পরিচয়টা নিজের অভিভাবকের মতন! কখনও ছোটখাটো থেকে বড় বিষয় পর্যন্ত তাকে না বললে হয়তো দিনটা ভালো যেতো না।
 তাঁকে প্রায় বলতাম ‘ভাইয়্যা যদি কেউ এসে অাপনার উপর অাক্রমণ করে?
হেসে বলতো,

একটা  দিন সবাইকেই মরতে হবে হয়তোবা ছোট একটা সত্যের জন্য মরলাম

“একটা দিন সবাইকেই মরতে হবে হয়তোবা ছোট একটা সত্যের জন্য মরলাম”
খুব অবাক হতাম কথা গুলো শুনে…..
বটগাছটি নেই কেমন যেন সবকিছুই অগোছালো হয়ে অাছে, অাগের মত নেই কিছুই
অন্ধকারে যাকে ধরে রক্তে মিশিয়ে ফেলে, অালো অাসতেই গায়ে লেগে থাকা রক্তের দাগ অস্বীকার করতে জানতে হয়।
তবুও অবচেতন মনে হারিয়ে যায় অনেকদূর অনেক ইচ্ছে করে
অামার মত কেউ শুধু অামাকে ভালোবাসবে, তাকে নিয়ে কোন এক শীতের সকালে সাগর দেখবো।
সাগর অামার বরাবরের মতই ভালো লাগে।
অাবার ফিরে অাসি বাস্তবতায়
ভালোবাসা? হাহাহা,  সমাজ কি তা মেনে নিবে
সমাজ মেনে নেবার কারন দেখিয়ে কতজন মরীচিকা দেখিয়ে হারিয়ে গেল
সবকিছুর পরও মন অাবার ভালোবাসার নেশায় খেলতে চায়।
মন বলে কথা, সে তো নিষ্পাপ, অবুঝ শিশুর মত! জিদ ধরে বসে অাছে, তার জন্যে অামার মত কাউকে খুঁজে দিতেই হবে।
সে কি জানে এই নির্মম সমাজ রীতি? জানলে হয়তো অামার মত  একদিন নিস্তব্ধ হয়ে যেত
জুলহাজ-তনয়ের রক্ত অাজও হৃদয়ে বইছে, কেটে যাওয়া নাড়ির মত! কল্পনাগুলো তাই সাদা-কালো না হয়ে রক্ত লাল  হয়েছে!
হয়তো কত জুলহাজ অাসবে রক্তে লাল হবে চারিদিক।
তারপর সাগর অাবার সবকিছু ধুয়ে নিয়ে যাবে,অবার অামরা ভুলে যাবো।
চুপ থেকে হয়তো স্বার্থপরের মত নিজের প্রাণ বাচাঁবো।
তারপর, একদিন হুট করে চলে যাবো সাগরের বুকে।
তবে জুলহাজ-তনয়ের মত সাগরের বুকে অামার রক্ত রাঙা হবে না।