টিয়েরনান ব্রেডি, যিনি আয়ারল্যান্ডে এলজিবিটি জনগোষ্ঠীর অধিকারের জন্য কাজ করছেন, এই বিষয়ে স্পষ্ট মন্তব্য করেন যে কিছু সময় গির্জার নেতৃত্ব দ্বারা প্রচারিত ভাষা এলজিবিটি জনগণের প্রতি ভীতি এবং অনুরাগের বাতাবরণ সৃষ্টি করে। তিনি এই বিষয়ে আয়ারল্যান্ডের ক্যাথলিক চার্চের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা করেছেন। ব্রেডির মতে, হোমোফোবিক ভাবভঙ্গি কোনো জন্মগত বিষয় নয়; এটি একটি শিক্ষিত মানসিকতা, যা বিভিন্ন সোর্স থেকে আমরা অর্জন করি। তিনি দৃঢ় বিশ্বাস প্রকাশ করেন যে গির্জা কেবল একটি মাধ্যম যেখান থেকে এই ধরনের নেতিবাচক মনোভাব উদ্ভূত হয়, তবে এর আরও অনেক উৎস রয়েছে, যেমন ক্রীড়া, রাজনীতি, এবং সামাজিক পরিপ্রেক্ষিত। তিনি আশাবাদী যে বিশ্বব্যাপী এলজিবিটি জনগণের প্রতি মনোভাব পরিবর্তিত হচ্ছে, যদিও এটি রাতারাতি বিপ্লবী পরিবর্তন আনবে না।
প্যাট্রিক আর গ্রাজাংকা, যিনি যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসি বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগে কর্মরত, তার গবেষণা মূলত হোমোফোবিয়া এবং গতানুগতিক চিন্তাভাবনার মধ্যেকার সম্পর্ক নিয়ে। ২০১৬ সালে, তিনি তার গবেষণার অংশ হিসেবে ৬৪৫ জন মার্কিন কলেজ শিক্ষার্থীর উপর কাজ করেছেন, এবং তাদের চার ধরনের বিশ্বাস বা ধারণা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়েছিল। এই গবেষণা গতানুগতিক চিন্তাধারা যেমন কৌলীন্য, ধর্মীয় অনুশাসন, পরম্পরা এবং অন্যান্য নির্ধারিত সামাজিক মানদণ্ডের সাথে হোমোফোবিয়ার সম্পর্ককে আলোচনা করে। তার গবেষণা লক্ষ্য করে যে এই ধরনের চিন্তাভাবনার লোকেরা হোমোফোবিক প্রবণতার দিকে আরও বেশি ঝুঁকতে পারে।
প্যাট্রিক আর গ্রাজাংকার গবেষণায় চারটি বিশেষ ধারণা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মতামত জানা হয়েছিল, যেগুলো হল:
১. একজন যৌন সংখ্যালঘু ব্যক্তি তার যৌনতা জন্মগত ভাবেই অর্জন করেন।
২. নির্দিষ্ট কোন একটি যৌন গোষ্ঠীর সবাই (যেমন, সমকামী পুরুষ বা নারীরা) সবাই একই রকম হয়ে থাকেন।
৩. কোন একজন ব্যক্তি শুধুমাত্র একটি যৌন গোষ্ঠীর অংশ হয়ে থাকেন।
৪. একটি যৌন গোষ্ঠীর একজনের সাথে পরিচয় হলে তাদের মতো সবাইকে জানা হয়ে যায়।
গবেষণায় দেখা গিয়েছিল যে প্রথম ধারণাটি, যে যৌন সংখ্যালঘু ব্যক্তিদের যৌনতা জন্মগত ভাবে অর্জিত, সবচেয়ে বেশি সমর্থন পেয়েছে। এটি যৌন সংখ্যালঘু এবং বৃহত্তর সমাজের সব ধরনের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেখা গিয়েছে। অপরদিকে, যারা এলজিবিটি গোষ্ঠীর প্রতি সবচেয়ে নেতিবাচক ধারণা প্রকাশ করেছেন, তারা অন্য তিনটি ধারণাকে গোঁড়াভাবে মেনে চলেন বলে গবেষণায় প্রকাশ পেয়েছে। গ্রাজাংকার গবেষণার ফলাফল থেকে এটাও বোঝা গিয়েছে যে, এলজিবিটি জনগোষ্ঠীর ব্যক্তিদের আরো খোলামেলা হয়ে যৌনতা নিয়ে কথা বলার কারণে তাদের প্রতি সামগ্রিক সমাজের মনোভাবের পরিবর্তন সাধিত হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশের সমাজের লোকেরা ভাষা গত ব্যাবহারের কোন পরিবর্তন হচ্ছে না। তারা আরো বেশি উগ্র হোমোফবিক হয়ে উঠছে।