আপাত দৃষ্টিতে বাংলাদেশে সমকামীতা একটা নিষিদ্ধ ব্যাপার। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে সমকামীতা এখনো একটা অভাবনীয় ব্যাপার। প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, এমন কি শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর একটা বিরাট অংশের কাছে সমকামীতা তৃতীয় লিঙ্গের সমার্থক। আর তৃতীয় লিঙ্গের পরিচায়ক প্রচলিত শব্দ “হিজড়া” একটা গালি।

 

পুরুষদের সমকামীতার প্রতি সামাজিক রক্তচক্ষু বরাবরই ছিল, এবং আছে। নারীসুলভ আচরণ এমন কি সাধারণ সহানুভূতিশীলতা, কেয়ারিং, রান্নাবান্নায় আগ্রহী পুরুষকেও তারা মেয়েলি বিবেচনা করেন। আর এটা তাদের কাছে হাস্যকর বিষয়। এতে সমাজের মধ্যে প্রোথিত নারীবিদ্বেষেরও একটা রূপ দেখতে পাওয়া যায়।

 

তাদের চোখে পুরুষের জন্য প্রচলিত জেন্ডার রোলের বাইরে যা কিছু আছে তা-ই হাস্যাস্পদ, উদ্ভট। নারীদের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা কিছুটা ভিন্ন। এর পেছনে দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসও অনেকাংশে দায়ী। ৯০ সালের পর থেকে ক্ষমতাশীন দুইজন প্রধানমন্ত্রীই ছিলেন নারী। তারা শক্ত হাতে দেশ শাসন করেছেন, অনেকের মতে পুরুষ শাসকদের টেক্কা দিয়ে অনেকাংশে ওদের ছাপিয়ে গেছেন। এতে করে নারীদের পুরুষালী হওয়াকে দোষের কিছু ভাবার প্রবণতা কিছুটা হলেও লাঘব হয়েছে।

 

তবে আশার কথা হচ্ছে নতুন প্রজন্মের কিশোর-কিশোরীরা LGBTQ এর ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন, সহর্মমী। ইন্টারনেট ব্যবহারকারী, মেট্রোপলিটন, আর মফস্বলি কিশোর-কিশোরীরা এসব ব্যাপারে কোনো রিজার্ভেশন রাখে না। ফেসবুক, ব্লগ, মাইক্রোব্লগের ছেলেমেয়েরা ভালই understanding এসব ব্যাপারে। তারা ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য বুঝে, প্রগতিশীল।

 

টিকটক সারা বিশ্বের মত বাংলাদেশের টিনএজ LGBTQ সদস্যদের জন্য নিরাপদ প্লাটফর্ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে যে কোনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মতই সেখানেও কিছু নেতিবাচকতা আছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সমাজের প্রতিফলনই হবে, এটাই স্বাভাবিক। তবে এসব কিছু ছাপিয়ে টিকটকে LGBTQরা মোটামুটি ভালভাবেই বিচরণ করছে।

 

May be there is lifht, after all, at the end of the tunnel!