ইসলামে নারীদের পর্দা করার বিধান আছে। কিন্তু কেন? নারীদের চুল ঢেকে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু কেন? মেয়েরা মেয়েদের ইচ্ছা মতো কাপড় পড়তে পারবে না। হাঁটুর উপড়ে তো কোন ভাবেই কাপড় পরা যাবে না। মেয়েদের স্তন দেখানর নিয়ম নেই। কিন্তু কেন? নিষিদ্ধ জিনিশের উপর আগ্রহ থাকে বেশি। আসলে পর্দা করে যা ঢেকে রাখতে বলা হয়েছে আসলেই কি সেখানে কোন নারী আজকে নিরাপদে ঘরের বাইরে বের হতে পারছে? আমরা পুরুষ নিয়ন্ত্রিত সমাজে বাস করছি। যেখানে ধর্ষণ আজকাল একটা নেসার মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে সেখানে পর্দা করে মেয়েরা কত টুকুই বা নিরাপদে আছে? দেকে রাখা জিনিশের উপর নিজর আরও বেশি করে যায়।
সূরা নং ২৪ আন নূর (আলো) আয়াত নং ৩১-
“আর মুমিন নারীদেরকে বল, যেন তারা তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করে। আর যা সাধারণত প্রকাশ পায় তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য তারা প্রকাশ করবে না। তারা যেন তাদের ওড়না দিয়ে বক্ষদেশকে আবৃত করে রাখে। আর তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, নিজদের ছেলে, স্বামীর ছেলে, ভাই, ভাই এর ছেলে, বোনের ছেলে, আপন নারীগণ, তাদের ডান হাত যার মালিক হয়েছে, অধীনস্থ যৌনকামনামুক্ত পুরুষ অথবা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ছাড়া কারো কাছে নিজদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। আর তারা যেন নিজদের গোপন সৌন্দর্য প্রকাশ করার জন্য সজোরে পদচারণা না করে। হে মুমিনগণ, তোমরা সকলেই আল্লাহর নিকট তাওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।”
শ্রদ্ধেয় পাঠক, এখানে আল্লাহ মুমিন নারীদের একই কথা বলতে বলেছেন। চোখ এবং যৌনাঙ্গ কন্ট্রোল করা। তারা যৌন উত্তেজনা সৃষ্টি করে এমন কিছু দেখবে না এবং মহিলাঙ্গ কন্ট্রোল করবে। নারীরা তাদের নারীঅঙ্গ বোধ হয় কন্টোল করতে পারে। কারণ এখন পর্যন্ত নারীরা পুরুষদের ধর্ষণ করেছে শোনা যায় নাই তেমন একটা। তবে দুএকটা ঘটতেও পারে। তবে পুরুষরা যেভাবে গণহারে শিশুবালক, শিশুবালিকা, নারী এমনকি বৃদ্ধাদেরও ধর্ষণ করছে সে তুলনায় কিছুই না। পুরুষগণ নারীদের দেখে উত্তেজিত হয়ে যায় তাই মহিলারা বোরকা পরে, তা হলেতো মহিলারাও পুরুষদের দেখে উত্তেজিত হয় যেহেতু দৃষ্টি সংযত করতে বলা হয়েছে তাই পুরুষদেরও বোরকা পরা উচিৎ।
এরপর দেখুন, “আর যা সাধারণত প্রকাশ পায় তা ছাড়া” – এই কথা দিয়ে কি বুঝানো হয়েছে? কী কী প্রকাশ পায়? পাঠক ধরুন, নারীরা সব ঢেকেই চলতে পারে যেমন পায়ে পা মুজা, হাতে হাত মুজা, মুখে উপর নেটের পর্দা। কিন্তু অবয়ব? তাদের বক্ষদেশ?নিতম্বদেশ? এটাতো প্রকাশ পাবেই। আল্লাহতো জানেন মুমিনদের আসল আকর্ষণ নারীদের বক্ষদেশ। তাইতো বেহেস্তি হুরদের উন্নতবক্ষা করেছেন, কিন্তু পৃথিবীর নারীদের স্তন না দিলেই পারতেন! কিংবা অন্য কোন সিস্টেমেও দিতে পারতেন। যেমন পুরুষদের বিশেষ সময়ে বিশেষ অঙ্গ বিশেষ রূপ পায়, তেমন করে বাচ্চাদের খাওয়াবার সময় অথবা অন্য কোন প্রয়োজনের সময় সেগুলো ভেসে উঠতো। তা হলেতো এতো ঝামেলাই হত না। আল্লার সিস্টেমের জন্য নারীরা কেন খেসারত দিবে?
“আর যা সাধারণত প্রকাশ পায় “– তাতে মহান আল্লাহর সমস্যা নেই। তবে তা প্রকাশিতই হোক।এতো বস্তাবন্দী হওয়ারতো দরকার নেই। স্বাভাবিক শালীনতা বজায় রাখলেই হল। বস্তাবন্দী হয়ে নিজের বিকাশ ও আরামকে হারাম করে নিজেকে ঘামের দুর্গন্ধে দুর্গন্ধিত করে কি লাভ!
প্রিয় পাঠক এবার আসুন পরের বাক্যে। “তারা যেন ওড়না দিয়ে তাদের বক্ষদেশ আবৃত করে”– এখানে মহান আল্লাহ সাধারণ পোশাকের সাথেই ওড়না দিয়ে বুক ঢেকে রাখতে বলেছেন। বোরকার কথা বলেননি। আর আরব দেশে পুরুষরাওতো বোরকার মত লম্বা পোশাক পরে, স্কার্ফও পরে। নারীরাও তাই। শুধু রঙের পার্থক্য। সাদা আর কালো। এখানেও বাঙালি মুমিনারা বৈষম্যের শিকার। কারণ তারা ঠিকই আলখাল্লা পরে আর পুরুষেরা প্যান্টশার্ট।
এবার আসি এরপরের বাক্যে নারীরা কাদের কদের সামনে যাবে, কাদের সামনে যাবে না।নারীরা না হয় না গেলো পুরুষরা যদি আসে? তাদেরও তো একই কন্ডিশন দেয়া উচিত, অমুক অমুকের সামনে তারা সৌন্দর্য প্রকাশ যেন না করে।
যাদের কাছে মহিলাদের সৌন্দর্য প্রকাশ করার কথা বলা হয়েছে তাদের সাথেওতো সম্পর্ক হতে পারে বা এরাওতো ধর্ষণ করতে পারে। অনেক মুমিন পিতা তার ঔরস জাত মেয়েকে ধর্ষণ করেছে। সৎ মেয়ের কথা নাহয় বাদই দিলাম।
আসল কথা হল মন। সবার উচিৎ মনকে কন্ট্রোল করা। আর নিষিদ্ধ জিনিসে কৌতূহল বেশি। তাই যত ঢেকে ঘুরে রাখার প্রচার আর প্রসার হবে তত মনে হবে, আহা কী মজার জিনিস যেন! যে সকল দেশে ইসলাম নেই, যেখানে মেয়েরা বিকিনি পরে ঘুরে বেড়ায়, এমন অনেক অঞ্চল আছে যেখানে মেয়েদের ঊর্ধাঙ্গ উদোম থাকে সেখানেতো তাহলে অনবরত ধর্ষণ হওয়ার কথা। তা কি হচ্ছে? আসলে মুমিনগণ জন্ম গ্রহণ করে বেহেস্ত আর হুরপরীর স্বপ্ন নিয়ে, বড় হয় নারীদের যৌন সামগ্রী মনে করে, তাই পর্দাটর্দাতেও কাজ হয় না। আর শিশুধর্ষণ? মহান আল্লাহ তার তেপান্ন বছরের রাসূল আর নয় বছরের শিশু আয়েশাকে সঙ্গমে লিপ্ত করিয়েছেন। মুমিনরা ভাবে, আহা এতে যেন কত মজা! এখনতো কেউ আর নয় বছরের মেয়ে বিয়ে দিবে না তাই শিশুধর্ষণ করে এর সাধ নেয়া।
মনের উপর কন্ট্রোল করতে পারলেই সেখানেই আসল জোয়। মনের সাথে যুদ্ধ করাটাই হল আসল জিহাদ। একজন মেয়ে তার ইচ্ছা অনুযায়ী কাপড় পরবে। তার যেমন ইচ্ছা তেমন সাজবে। সে বিকিনি পড়ে ঘুরবে নাকি শর্টস পড়ে সেঁতা তার উপর ছেড়ে দিন না। আপনি বা আমই বল্যতে যাবার কয়ে? মেয়েদের ওদের মতো করে একটু বাঁচতে দিন না। ওদের বড় পরিচয় ওরাও মানুষ। যেদিন আমরা মেয়েদেরকে মেয়ে না ভেবে মানুষ ভাবতে শিখব, সেদিন এই মেয়ে মানুষগুলো নিরাপদে গভির রাতে বাসায় ফিরতে পারবে নিরাপদে। ধরশিন হবে না। সাঁটিতে অন্তত বাঁচতে তো পারবে।