আসলে  আমাদের সমাজের মানুষ  নিজের  মতো করেই এসকল বিষয় ভাবেন। নিজে থেকে রিসার্চ করেন না। বা শেখার আগ্রহটা খুব কম। টাই মানুষ , বা ধর্মীয় নেতারা, অথবা রাজনৈতিক নেতারা যাই বলেন না কেন, কথার সত্যতা যাচাই বাছাই না করেই এই শকল ভ্রান্ত ধারনাগুলোকে মনের মধ্যে লালন করেন।

যেসব পুরুষ এই গে জিন বহন করছে, তারা সবাই সমকামী?

অবশ্যই না। – স্যান্ডারস বলেন, না, কারণ আরো অন্যান্য বিষয় যেমন পরিবেশ এই অভিমুখিতা নির্ধারণে প্রভাব ফেলে। এ ছাড়াও আরো অসংখ্য জিন একত্রে এই অভিমুখিতা নির্ধারণের জন্য হয়তো কাজ করছে। এছাড়াও হয়তো আরো পুরুষ আছে, যাদের এই জিন আছে, এবং তাদের সমকামী হবার সম্ভাবনাও থাকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা সমকামী হন না। কারণ অন্যান্য জিন ও আরো কিছু ফ্যাক্টর এই যৌন অভিমুখিতা নির্ধারণে প্রভাব ফেলে। এটা থেকে পরবর্তীতে হয়তো ব্যাখ্যা করা যাবে মানুষ উভকামী কেন হয়।

নারীদের ক্ষেত্রে কী বলব? এখন কি আমরা এটা বলব, “লেসবিয়ান জিনের” ও অস্তিত্ব আছে?

নারীর সমকামিতার বিষয়টি; জীববৈজ্ঞানিক আতশ কাঁচ দিয়ে দেখার ক্ষেত্রে গবেষণা গুলো এখনো অনেক পিছিয়ে আছে। এর জন্য কিছু গবেষক, যেসব নারীরা সমকামী; তাদের বাস্তবে যৌনতার তারল্য প্রদর্শন করতে বেশি দেখা যায়– এই বিষয়টিকেই দায়ী করেছেন। কারণ এর ফলে নারী সমকামিদের উপর করা গবেষণা গুলো জটিল হয়ে যাবে। যদিও গবেষণা থেকে দেখে গিয়েছে, নারীদের সমকামিতার পিছনে জিনগত কারণ বর্তমান।

স্যান্ডারস বলেছেন, গবেষণা আছে, যেখান থেকে বলা যায়, নারীর সমকামী হবার পছনে জীনগত কারণ আছে। কিন্তু পুরুষের ক্ষেত্রে এই ধরনের গবেষণা অধিক হারে করা হয়েছে- এটা সত্যি।

ইউএস ন্যাশনাল ইন্সটিউট হেলথের ডিন হ্যামার বলেছেন, এই সর্বশেষ অন্বেষণটি সমকামী এবং বিষমকামীদের যৌন অভিমুখিতা নির্ধারণে যে জিনের ভুমিকা থাকতে পারে, তাই নিয়ে এসেছে। এর মাধ্যমে আমরা আরো একধাপ এগিয়ে বলতে পারি যে সমকামিতা কারো ইচ্ছাকৃত লাইফস্টাইল নয়। তবে এই গবেষণার সবচেয়ে তাৎপর্যের জায়গাটা হলো, মানুষের যে নানা বৈচিত্র্য আছে; সে জায়গাটি আরো স্পষ্ট হয়ে উঠলো।

ফ্রান্সিস ক্রিক ইন্সটিউটের অধ্যক্ষ রবিন লোভেল ব্যাজ বলেছেন, “এই পেপারের বিষয়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ; কারণ এর মাধ্যমে আমরা আরো বুঝতে পারছি, জিন আমাদের ব্যবহারকে কতটা প্রভাবিত করে; কিন্তু সর্বজন বিদিত যে, এই ধরনের গবেষণা কতটা কঠিন। এমনকি যদি একটি জিনের প্রকরণের সাথে কারো যৌন অভিমুখিতার সম্পর্কের আন্তঃসংযোগ দেখা যায়, তার মানে এই নয় যে, তার সমকামী হবার পিছনে সে জিন দায়ী। এটার শুধুমাত্র অর্থ হল কিছু মানুষের যৌন পরিচয়ে নির্ধারণে এর সংযোগ আছে।

বিজ্ঞান মানুষকে অনেক কিছু নতুন করে বুঝতে শিখিয়েছে। অনেক নতুন নতুন আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে আমাদের উপহার দিয়েছে অনেক কিছু।  আমাদের দৈনন্দিন দিবনের অনেক কাজ কয়ে সহজ করে দিয়েছে বিজ্ঞান। কিন্তু ধর্মীয় গোঁড়ামি আর অন্ধ বিশ্বাসের কাছে আজও বিজ্ঞান পরাজিত। সেখানে আমাদের সমাজের  মানুষ  সমকামিতা নিয়ে বিজ্ঞানের এই গবেষণাকে গুরুত্ব দেন না।