মা, আমাকে ক্ষমা করে দাও। আমি কাপুরুষের মত পালিয়ে গেলাম। কিন্তু কি করব মা, আমি কাজলীকে অনেক ভালোবাসি, ওকে ছাড়া থাকতে পারি না। এমনকি সে আমাকে ছেড়ে যেতে পারে না। তাই, আমরা দুজনেই মৃত্যু বেছে নিয়েছি। আমাদের মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়।

  শেষ

অপর্ণা ও কাজলী

আবার- আমাদের ভালোবাসার দাবি হিসেবে একটাই অনুরোধ, আমাদের দুজনকে একই শ্মশানে দাহ করা হোক। এটাই আমাদের শেষ ইচ্ছা।’

26 নভেম্বর, 2004 তারিখে, সকাল 10 টার দিকে অপর্ণা বিশ্বাস (20) এবং কাজলি ঘোষ (18) নামে দুই যুবতী উত্তর 24 পরগনার বনগাঁ স্টেশন থেকে কিছুটা দূরে ট্রেনের নীচে মাথা ঝুলিয়ে আত্মহত্যা করেন। এই দুই তরুণী ছিল সমকামী। তারা একে অপরকে গভীরভাবে ভালবাসত। তাদের লেখা সুইসাইড নোট থেকে জানা যায় সমকামিতার করুণ পরিণতি।

সমকামীদের মধ্যে মানসিক সমস্যা নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে। আমেরিকার গে, লেসবিয়ান অ্যান্ড স্ট্রেইট এডুকেশন নেটওয়ার্ক (GLSEN) এর 2013 সালের একটি গবেষণায় পাওয়া গেছে-

সমকামী/যৌন সংখ্যালঘুদের 55% তাদের যৌনতা সম্পর্কে অনিরাপদ বোধ করে।

74% সমকামীরা মৌখিকভাবে অপব্যবহারের শিকার হয়েছে।

16% সমকামীদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে।

ব্রিস্টলের এক গবেষণায় দেখা গেছে, যৌন সংখ্যালঘুরা বিষমকামীদের তুলনায় চারগুণ বেশি বিষণ্নতার শিকার হয়। সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের মতে, সমকামীদের মধ্যে মৃত্যুর তৃতীয় প্রধান কারণ হল আত্মহত্যা, অন্য যেকোনো গোষ্ঠীর তুলনায় দ্বিগুণ হারে। এছাড়াও-

সহিংসতা

মাদকাসক্তি

বিষণ্ণতা

অনিরাপদ যৌনতা

আত্মহত্যা

উন্নত, সভ্য দেশে মানুষ খুব সহানুভূতিশীল। এ নিয়ে তারা সোচ্চার। কিন্তু আমাদের দেশে নয়। এখানে সমকামীদের অনুমতি দেওয়া হয় না, এমনকি বাবা-মায়ের দ্বারাও।

  যুক্তরাজ্য একটি $4.5 মিলিয়ন এলজিবিটি অ্যাকশন প্ল্যান চালু করেছে যা যৌন সংখ্যালঘুদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে কাজ করবে। আমাদের দেশে এত তাড়াতাড়ি এমন ভাবা তো দূরের কথা!